স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য মন ও শরীর সুস্থ রাখার সেরা টিপস

 


বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পালন করা একটি শারীরিক এবং মানসিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য উন্নত জীবনযাপন পালনে নানা রকম বাধা-বিপত্তি আসে। শারীরিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য এটি একে অন্যের পরিপূরক। আপনি শারীরিক সুস্থতা ছাড়া যেমন মানসিক সুস্থতা অনুভব করতে পারবেন না তেমনি মানসিক সুস্থতা ছাড়া শারীরিক সুস্থতা উপভোগ করতে পারবেন না। উভয়ই সুস্থ রাখতে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা, শরীরচর্চা-ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং চলাফেরায় মনোযোগ দিতে হবে। আজকের আর্টিকেলটি আপনার দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতা উপভোগ করতে কার্যকরি ভূমিকা পালন করবে এবং আপনি সুখী জীবনযাপন করতে পারবেন।

{tocify} $title={Table of Contents}

স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পালনের জন্য আপনার প্রতিদিনের রুটিনে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে হলে আপনার স্বাস্থ্যকর অভ্যাস পালন অপরিহার্য। আপনার উচিত আপনার দৈনন্দিন রুটিনে কিছু মৌলিক স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত করা। আপনার যে সমস্ত অভ্যাস প্রতিনিয়তই করা উচিত তাহলো:

  • ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে পানি পান করা। 
  • শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা। 
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দেয়া।
  • অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার পরিহার 

সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করার ফলে আপনার শরীরের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত হবে এবং শরীরে ও প্রয়োজনীয় বর্জ্য বের করে দিবে। তাছাড়া এটি ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকালে খালি পেটে পানি পান করার অভ্যাস করে তুলতে পারলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে।  ‌‌

একটি আদর্শ শরীর গঠনে শরীরচর্চা অনস্বীকার্য। শরীরচর্চা ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার শরীরের অবকাঠামো ও গঠন সঠিক থাকবে। আপনার শরীরের ফিটনেস যদি ঠিক থাকে তাহলে মন ও ফ্রেশ থাকবে। প্রতিদিন চেষ্টা করবেন অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট সকালবেলা হাঁটাচলা করা। তাছাড়া শরীরচর্চা আমাদেরকে রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। সুতরাং আপনার দৈনন্দিন অভ্যাসের তালিকায় শরীরচর্চা রাখা জরুরি। 

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে যে কোন মানুষেরই সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। আপনার শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে ঘুম যেন সঠিক পরিমাণ হচ্ছে। দৈনন্দিন রাতে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হলে আপনি মানসিক শক্তি পাবেন যা আপনার মনোবলকে আরো চাঙ্গা করে তুলবে।

আদর্শ খাদ্য তালিকা

সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। শরীরের সঠিক পুষ্টি ও শক্তি সঞ্চালনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফলমূল,শাকসবজি,ডাল, মাছ,মাংস রাখতে হবে। এসব খনিজ যুক্ত খাবার গুলো শরীরে ভিটামিন ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি প্রতিদিন ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করে তুলতে পারেন তাহলে আপনি স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন। 

খাদ্য তালিকার সঠিক মাত্রা বজায় 

লক্ষ্য রাখতে হবে, শরীরে যেন প্রোটিন এবং ফ্যাটের সঠিক মাত্রা বজায় থাকে। প্রোটিন ও ফ্যাট আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। তবে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। এতে শরীর স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। খাদ্য তালিকায় নিয়মিত মাছ, মাংস এবং ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করুন এবং নিয়মিত খান।পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। দিনে অন্ততপক্ষে ৬ থেকে ১০ ক্লাস পানি পান করার চেষ্টা করবেন। পানি আমাদের শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখতে সহযোগিতা করে।

মানসিক স্বাস্থ্য বজায় 

আমি প্রথমেই বলেছি শারীরিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের পরিপূরক। শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখলে হবে না সুস্থ থাকতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে ও লক্ষ্য রাখতে হবে। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই মানসিক চাপ এবং উদ্বিগ্ন থেকেই মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভোগেন। আপনি যদি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক না রাখেন তাহলে কখনোই মনে শান্তি ফিরে পাবেন না। মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে মেডিটেশন করা যেতে পারে। আপনি দৈনন্দিন ৩০ মিনিট মেডিটেশন করলে মানসিক উদ্বেগ দূর হতে সাহায্য করবে এবং মনে শান্তি নিয়ে আসবে। নেতিবাচক চিন্তা হতে দূরে থাকবেন এবং সব সময় চেষ্টা করবেন ইতিবাচক চিন্তা করতে এতে আপনার মানসিক সুস্থতা বজায় থাকবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম

শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম করতে হবেই। যখনই মনে হবে খুব চাপে আছে তখনই বিশ্রাম নিন। কাজকে বিরতি দিন। মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সব সময় চেষ্টা করবেন আপনার পছন্দের কাজটি করতে। যে কাজটি আপনি করতে ভালোবাসেন সে কাজ বেশি বেশি করার চেষ্টা করবেন এতে আপনার মনকে পুনরুজ্জীবিত করবে এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহযোগিতা করবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিলে শরীর এবং মন চাঙ্গা থাকবে। সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখুন, আত্বীয় স্বজনের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।

আত্মবিশ্বাসী থাকা 

প্রতিটি কার্যসম্পাদন এর জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রেরণা এবং আত্মবিশ্বাস। আপনার দৈহিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে আপনার আত্মবিশ্বাস হওয়া উচিত আকাশচুম্বী। আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনো হেরে যায় না। আত্মবিশ্বাসের লোকজন সব সময় সুস্থ থাকে।

একটু স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন শুধুমাত্র শারীরিক সুস্থতা নয় এটি আমাদের আত্মিক সুখ-শান্তি। স্বাস্থ্যকর জীবন সুখী জীবন যাপনের জন্য পরিহার। সঠিক খাদ্য অভ্যাস, পর্যাপ্ত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা অর্জন সম্ভব। আপনি যদি আমাদের দেওয়া টিপসগুলো ফলো করতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই একটি সুখী জীবন যাপন উপভোগ করতে পারবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post